ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ২২-০৮-২০২৩ ০৮:২৮:৫৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২২-০৮-২০২৩ ০৮:২৮:৫৫ অপরাহ্ন
বান্দরবানের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। এম,এ,কাশেম পাপ্পু,ব্যবস্থাপনাপরিচাক-নিপ্পন গ্রুপ,
প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস, কালবৈশাখী, টর্নেডো, ভূমিকম্প—দুর্যোগের অন্ত নেই। কিন্তু সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মিলে বাংলাদেশের যত ক্ষয়ক্ষতি হয়, এক বন্যায়ই ক্ষতি হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। আর ক্রমাগত নদী ভরাটের কারণে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে।
এখন প্রায় প্রতিবছরই তেমন বন্যা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। বর্ষা এলেই বন্যায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে, ঘটবে ফসলহানি, নদীভাঙনের কারণে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে, এ যেন বাংলাদেশের অবধারিত চিত্র।

এবার বান্দরবানের মানুষ বন্যার যে চিত্র দেখেছে, তা আগে কখনো তারা দেখেনি।
টানা ছয় দিন বান্দরবান জেলা শহরসহ বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন ছিল। এ সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগব্যবস্থা। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। জেলার ২৫২টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৯ হাজার মানুষ উঠেছিল।
দুর্গত বান্দরবান পৌর এলাকা ও লামায় দেখা দেয় বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সংকট। সেনাবাহিনী বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং অন্য কিছু প্রতিষ্ঠান বন্যাদুর্গত এলাকায় বোতলজাত পানি সরবরাহ করে। পাহাড়ধসে প্রায় ৪৫০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় মৎস্য দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকার।
৪৩০টি জলাশয় ভেসে গেছে। এ ছাড়া বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা ১৫৯টি প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ১৫০ জলাশয় ও ৩০টি লেকের মাছ ভেসে গেছে লামা উপজেলায়। রোপা আমনসহ কৃষি খাতে প্রায় ৯ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়।

বন্যার পানি গত ১০ আগস্ট পুরোপুরি নেমে গেলেও বন্যার ধকল কাটিয়ে এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি বান্দরবান জেলা। বেড়েছে বন্যা-পরবর্তী নানা রোগ।

প্রশ্ন উঠতে পারে, পাহাড়ি এলাকা বান্দরবানে এমন বন্যা কেন? উত্তর খুঁজতে একটু পেছনে ফিরে তাকাতে হবে। তিন দশক আগে বান্দরবান শহর অংশে সাঙ্গু নদীতে অনেক বড় বড় পাথর ছিল, নদীর দুই পার ছিল উঁচু। পাথর তুলে তুলে বিক্রি করা হয়েছে। নদীতে পাথর না থাকায় ঢলে নেমে আসা মাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এতে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। বান্দরবান শহরের চারপাশে তুলনামূলক উঁচু পাহাড়। শহরটি মাঝের নিচু অংশে। তাই নদীতে উপচে পড়া পানি হলে তা শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সাঙ্গুর পাশাপাশি মাতামুহুরী নদীর পানিও বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ কারণে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।

প্রতিবছরই নানা কারণে বাংলাদেশের নদ-নদীর পানি বহন করার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে অত্যধিক বৃষ্টিপাত হলে বা নদীতে পানি বেড়ে গেলে সহজেই আশপাশের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সবার আগে এখন বান্দরবানের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।


 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ